তিন গোয়েন্দা
বাংলাদেশের সেবা প্রকাশনী হতে প্রকাশিত জনপ্রিয় একটি কিশোর গোয়েন্দা কাহিনী সিরিজ।
তিন গোয়েন্দা সিরিজের ৩০০'র বেশি বই বেরিয়েছে। তন্মধ্যে মাত্র তিনটি
উপন্যাস আর বাকি সবগুলোই বড় গল্প। উপন্যাসগুলো আলাদা আলাদা বইতে দুই খন্ডে
প্রকাশিত হয়েছে। সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত প্রতিটি বই পেপারব্যাকে।
প্রজাপতি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইগুলো শোভন এবং হার্ডকভারে।
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১.১ [তিন গোয়েন্দা, কঙ্কাল দ্বীপ,রূপালী মাকড়সা]:
Download তিন গোয়েন্দা
কঙ্কাল দ্বীপ
রূপালী মাকড়সা
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১.২ [ছায়াশ্বাপদ, মমি, রত্নদানো]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ২.১ [প্রেতসাধনা, রক্তচক্ষু, সাগরসৈকত]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ২.২ [জলদস্যুর দ্বীপ-১,২, সবুজ ভূত]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ৩.১ [হারানো তিমি, মুক্তোশিকারী,মৃত্যুখনি]:
Download
মৃত্যুখনি
মৃত্যুখনি
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ৩.২ [কাকাতুয়া রহস্য, ছুটি, ভূতের হাসি]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ৪.২ [ড্রাগন, হারানো উপত্যকা, গুহামানব]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ৬ [মহাবিপদ, খেপা শয়তান, রত্নচোর]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ৭ [পুরনো শত্রু, বোম্বেটে, ভুতুরে সুড়ঙ্গ]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ৮ [আবার সম্মেলন, ভয়ালগিরি,কালো জাহাজ]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ৯ [পোচার, ঘড়ির গোলমাল, কানা বেড়াল]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১০ [বাক্সটা প্রয়োজন, খোঁড়া গোয়েন্দা, অথৈ সাগর ১]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ২৯ [আরেক ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন, মায়াজাল, সৈকতে সাবধান]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ৬৬ [পাথরে বন্দি, গোয়েন্দা রোবট, কালো পিশাচ]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ২৫ [জিনার সেই দ্বীপ , কুকুরখেকো ডাইনি, গুপ্তচর শিকারী]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১০৯ [ওয়ান্ডারল্যান্ড, খুনে রোবট, নেকড়ের গর্জন]:
তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১২৭ [অমঙ্গলের ছায়া, খুনি লাশ, ড্রাগনরাজার দেশে]:
১৯৮৫
খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাস থেকে বিদেশী কাহিনী অবলম্বনে শুরু হয় এই
সিরিজটি। প্রথম থেকেই রকিব হাসানই এই বিখ্যাত সিরিজটি লেখার কাজ করেন। রকিব
হাসান একটানা ১৬০টি কাহিনী লেখেন। পরবর্তীতে শামসুদ্দীন নওয়াব এটি লেখার
কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।শামসুদ্দীন নওয়াব মূলত একজন গোস্ট রাইটার। 'তিন
গোয়েন্দা' তিনজন কিশোর গোয়েন্দার গল্প।
তিন
গোয়েন্দা পুরোপুরি মৌলিক কাহিনী নয়। ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন গোয়েন্দা
কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে রচিত। বিশেষ করে প্রথম দিককার বইগুলো রবার্ট
আর্থারের ইংরেজি সিরিজ "থ্রি ইনভেস্টিগেটরস" অবলম্বনে রচিত। আবার কিছু বই
এনিড ব্লাইটনের "ফেমাস ফাইভ" অবলম্বনে রচিত। এই তিনজন গোয়েন্দাকে ঘিরেই
'তিন গোয়েন্দা'র শোভন প্রকাশনা বের হয় তিন বন্ধু নামে প্রজাপতি প্রকাশন
থেকে।
দৈনিক
প্রথম আলো পরিচালিত একটি জরিপে বেরিয়ে আসে, বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীদের
পঠিত গল্পের বইয়ের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় বই হচ্ছে 'তিন গোয়েন্দা', আর
প্রিয় চরিত্রের মধ্যে আছে যথাক্রমে কিশোর পাশা, রবিন মিলফোর্ড আর মুসা
আমান। জরিপে ৪৫০ জনের মধ্যে ৮১ জনই (১৮%) তিন গোয়েন্দার পক্ষে মত দিয়েছে।
রকিব
হাসানই সেবা প্রকাশনীর কর্ণধার কাজী আনোয়ার হোসেনকে প্রস্তাব করেন
কিশোরদের উপযোগী একটি কাহিনী শুরু করার। সেবা প্রকাশনী থেকে তখন কুয়াশা
সিরিজ শেষ হয়ে যাওয়ায় আনোয়ার হোসেনও সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।
অবশেষে ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় তিন গোয়েন্দার প্রথম বই "তিন
গোয়েন্দা"। ২০০৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত টানা লিখে যান রকিব হাসান। তারপর এই
সিরিজের হাল ধরেন শামসুদ্দিন নওয়াব। এদিকে কাজী শাহনূর হোসেনের পরামর্শে
তিন গোয়েন্দার পুরনো বইগুলো প্রকাশিত হতে থাকে ভলিউম আকারে, কয়েকটি বই
একসাথে। পুরনো বইগুলো আর আলাদাভাবে বের হয় না। এদিকে শামসুদ্দিন নওয়াব
মূল চরিত্রগুলোর পাশাপাশি অন্তর্ভুক্ত করলেন নতুন চরিত্র কাকাতুয়া কিকো।
শামসুদ্দিন নওয়াবের রচনায় কাহিনীগুলো ধার করা হয় এনিড ব্লাইটন,
ক্রিস্টোফার পাইকসহ আরো অনেক লেখকের বই থেকে। এছাড়া সেবা প্রকাশনীর
অন্যান্য সিরিজ যেমন "গোয়েন্দা রাজু", "রোমহর্ষক" আর কাজী শাহনূর হোসেনের
লেখা "নীল-ছোটমামা" সমস্ত বইই রূপান্তর করা হয়েছে তিন গোয়েন্দায়।
এছাড়াও শামসুদ্দিন নওয়াবের পাশাপাশি রকিব হাসানও মাঝে মাঝে তিন গোয়েন্দা
লিখে থাকেন।[৬]
পৃথিবীর
বৃহত্তম সাধারণ-আগ্রহের বাণিজ্যিক প্রকাশনা সংস্থা ‘র্যান্ডম হাউস’
কর্তৃক প্রকাশিত মূল ইংরেজি ‘থ্রী ইনভেস্টিগেটরস (১৯৬৪-১৯৮৭)’ সিরিজে ৪৩ টি
বই প্রকাশিত হয়েছিল যার মধ্যে ১০টি লেখেন রবার্ট আর্থার, ১৩টি লেখেন
উইলিয়াম আর্ডেন যার আসল নাম ছিল মাইকেল কলিন্স, ২টি লেখেন নিক ওয়েস্ট,
১৫টি লেখেন এম ভি ক্যারি বা ম্যারি ভার্জিনিয়া ক্যারি এবং ৩টি লেখেন মার্ক
ব্র্যান্ডেল। এই বইগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। একটি জার্মান-দক্ষিণ
আফ্রিকান চলচ্চিত্র নির্মাণ সংস্থা দুটি চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেন- ‘দা থ্রী
ইনভেস্টিগেটরস এন্ড দা সিক্রেট অফ স্কেলেটন আইল্যান্ড (২০০৭)’ এবং ‘দা
থ্রী ইনভেস্টিগেটরস এন্ড দা সিক্রেট অফ টেরর ক্যাসল (২০০৯)’, যা ব্যপক
জনপ্রিয় হয়। চলচ্চিত্র দুটির কাহিনী বই এর থেকে অনেকটা আলাদা এবং আধুনিক
সময় এর পটভূমিতে চিত্রিত যেখানে জুপ, পীট এবং বব এর কাছে ‘জিপিএস’,
‘সেলফোন’ এর মত প্রযুক্তি রয়েছে। পরবর্তিতে ‘দা থ্রী ইনভেস্টিগেটরস ক্রাইম
বাস্টার্স (১৯৮৯-১৯৯০)’ নামে একটি সিরিজে ১১টি বই প্রকাশিত হয় যার মধ্যে
একটি করে লেখেন উইলিয়াম আর্ডেন এবং মার্ক ব্র্যান্ডেল। ক্রাইম বাস্টার্সের
অন্যান্য লেখকরা হচ্ছেন- মেগান এবং এইচ উইলিয়াম স্টাইন, জি এইচ স্টোন,
উইলিয়াম ম্যাক কে এবং পিটার লের্যাঞ্জিস।
এনিড ব্লাইটন ২১টি ফেমাস ফাইভ (১৯৪২-১৯৬৩) সিরিজের বই লেখেন যা অত্যন্ত
জনপ্রিয় ছিল। এই সিরিজের ভিত্তিতে ১৯৭৭ সাল এবং ১৯৯৫ সালে টিভি সিরিজ
চিত্রিত হয়েছিল। বর্তমানে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ সংস্থা ‘ফেমাস ফাইভ’
সিরিজের চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। ‘ফেমাস ফাইভ’ সিরিজের দুই ভাই
জুলিয়ান, ডিক এবং তাদের বোন অ্যান কে তিন গোয়েন্দার কিশোর, মুসা, রবিন এ
পরিবর্তন করা হয়। তিন ভাই-বোনের চাচাত বোন হল জর্জিনা পারকার।
এনিড
ব্লাইটন ১৫টি সিক্রেট সেভেন (১৯৪৯-১৯৬৩) সিরিজের বই লেখেন যা অত্যন্ত
জনপ্রিয় ছিল। এছাড়া এভালিন ল্যামান্ড (Evelyne Lallemand) ফ্রেঞ্চ ভাষায়
১২টি সিক্রেট সেভেন (১৯৭৬-১৯৮৪) সিরিজের বই লেখেন যা পরে ইংরেজিতে অনুদিত
হয়। গোয়েন্দা রাজু সিরিজ এ সিরিজ অবলম্বনে লেখা যাতে চরিত্রগুলো ছিল-
রাজু (তিন গোয়েন্দায় কিশোর, সিক্রেট সেভেনে পিটার), অপু (তিন গোয়েন্দায়
মুসা, সিক্রেট সেভেনে জ্যাক), অজিত (তিন গোয়েন্দায় রবিন, সিক্রেট সেভেনে
কলিন), টিপু (তিন গোয়েন্দায় বব, সিক্রেট সেভেনে জর্জ), মিশা (তিন
গোয়েন্দায় মিশা, সিক্রেট সেভেনে জেনেট), রানু (তিন গোয়েন্দায় ডলি,
সিক্রেট সেভেনে প্যাম), অনিতা (তিন গোয়েন্দায় অনিতা, সিক্রেট সেভেনে
বারবারা), কুকুর জিমি (তিন গোয়েন্দায় টিটু, সিক্রেট সেভেনে স্ক্যাম্পার),
বাবলি (তিন গোয়েন্দায় বাবলি, সিক্রেট সেভেনে সুসি) এবং লুডু (তিন
গোয়েন্দায় পটার, সিক্রেট সেভেনে জেফ)। পরবর্তিতে গোয়েন্দা রাজু সিরিজের
বইগুলোকে তিন গোয়েন্দায় পরিণত করায় ‘সিক্রেট সেভেন’ সিরিজের বইও তিন
গোয়েন্দা সিরিজে অন্তর্ভুক্ত আছে।
‘রোমহর্ষক’
বা রেজা-সুজা সিরিজ লেখা হয়েছে ‘হার্ডি বয়েজ’ সিরিজ অবলম্বনে যেখানে
ছেলেরা তিন গোয়েন্দার চেয়ে বয়সে অল্প বড় এবং আপাতদৃষ্টিতে অপেক্ষাকৃত
বিপজ্জনক অভিযানে অংশ নেয়। ‘রোমহর্ষক’ সিরিজের বইগুলোও তিন গোয়েন্দায়
পরিণত করায়, ‘হার্ডি বয়েজ’ সিরিজের বইও তিন গোয়েন্দা সিরিজে অন্তর্ভুক্ত
আছে। ১৯২৭ সাল থেকে আজ (২০১৪) পর্যন্ত ‘হার্ডি বয়েজ’ সিরিজের ৪৮৯ টি বই
প্রকাশিত হয়েছে।
শামসুদ্দিন
নওয়াবের রচনায় কাহিনীগুলোতে ক্রিস্টোফার পাইকের কিছু বই অবলম্বনে লেখা
হয়েছে। ক্রিস্টোফার পাইকের আসল নাম কেভিন ক্রিস্টোফার ম্যাকফাডেন এবং তিনি
১৯৮৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ৭৫টি ‘অ্যাডাল্ট ফিকশন’, ভৌতিক এবং
‘ভ্যাম্প্যায়ার’ কাহিনী লেখেন।
Post a Comment