আমার ফাঁসি চাই

জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে বললেন, এটা একটা সেনা বাহিনী হলো ? এটা একটা বর্বর, নরপিশাচ, উচ্ছৃংখল, লোভী, বেয়াদপ বাহিনী। এই বাহিনীর আনুগত্য নেই , শৃংখলা নেই , মানবিকতা নেই, নেই দেশ প্রেম। এটা একটা দেশদ্রোহী অসভ্য হায়েনার বাহিনী। তোমরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কথা বল। সারা বিশ্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মতো এতো ভদ্র, নম্র, সভ্য, বিনয়ী এবং আনুগত্যশীল বাহিনী খঁজে পাওয়া যাবেনা। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মানবিকতা বোধের কোন তুলনাই চলেনা। কি অসম্ভব সভ্য আর নম্র তারা।
পচিশে মার্চ রাতে তারা ( পাকিস্তান আর্মি) এলো, এসে আব্বাকে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব) সেলুট করলো, মাকেও সেলুট করলো, আমাকেও সেলুট করলো। সেলুট করে তারা বলল, স্যার আমরা এসেছি শুধু আপনাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। অন্য কোন কিছুর জন্য নয়। আপনারা যখন খুশি যেখানে খুশি যেতে পারবেন। যে কেউ আপনার এখানে আসতে পারবে। আমরা শুধু আপনাদেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো। আপনারা বাইরে গেলে আপনাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা আপনাদের সাথে যাবো। কেউ আপনাদের এখানে এলে আমারা তাকে ভালভাবে তল্লাশি করে তার পর তাকে এখানে ঢুকতে দিব। এসবই করা হবে আপনাদের নিরাপত্তার জন্য। সত্যিই পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যা করেছে তা সম্পুর্ন আমাদের নিরাপত্তার জন্য করেছে।
২৬ শে মার্চ দুপুরে আব্বাকে (শেখ মুজিব) যখন পাকিস্তানী বাহিনী নিয়ে যায়, তখন জেঃ টিক্কা খান নিজে এসে আব্বাকে ও মাকে সেলুট দিয়ে আদবের সাথে দাড়িয়ে বলে, স্যার প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আলোচনার জন্য নিয়ে যেতে বলেছেন। আমি আপনাকে নিয়ে যেতে এসেছি। আপনাকে নেওয়ার জন্য বিশেষ বিমান তৈরি(স্পেশাল ফ্লাইট রেডি) আপনি তৈরি হয়ে নেন এবং আপনি ইচ্ছা করলে ম্যাডাম (বেগম মুজিব) সহ যে কাউকে সঙ্গে নিতে পারেন। আব্বা-মা'র সাথে আলোচনা করে একাই গেলেন। পাকিস্তান আর্মি যতদিন ডিউটি করেছে এসেই প্রথমে সেলুট দিয়েছে।
শুধু তাই নয়, আমার দাদীর সামান্য জ্বর হলে পাকিস্তানীরা হেলিকপ্টার করে টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকা পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছে। জয় তখন আমার পেটে, আমাকে প্রতি সাপ্তাহে সি এম এইচ নিয়ে ওরা চেকআপ করাতো। জয় হওয়ার একমাস আগে আমাকে সি এম এইচ-এ ভর্তি করিয়েছে। ৭১ সালে জয় জন্ম হওয়ার পর পাকিস্তান আর্মিরা খুশিতে মিষ্টি বাটোয়ার করেছে এবং জয় হওযার সমস্ত খরচ পাকিস্তান আর্মিরাই বহন করেছে । আমরা যেখানে খুশি যেতে পারতাম। পাকিস্তানীরা দুটি জীপে করে আমাদের সাথে যেতো নিরাপত্তার জন্য আমাদের পাহারা দিতো।
আর বাংলাদেশের আর্মিরা! জানোয়ারের দল, অমানুষের দল এই অমানুষ জানোয়ারেরা আমার বাবা-মা, ভাই সবাইকে মেরেছে- এদের যেন ধ্বংশ হয়।
(৫৩ ও ৫৪ পৃষ্টা)
লেখক : মতিউর রহমান রেন্টু
আমার, শেখ মুজিবের ও শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই
ইতিহাস সাক্ষ্যদেয় ইংল্যান্ডের ক্রমওয়েল রাজতন্ত্রের ক্ষমতা লোপ করে নিজেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে একজন স্বৈরাচারী হয়েছিলেন। কিন্তু ইংল্যান্ডের গণতান্ত্রিক জনতা তাকে ক্ষমা করেনি। দেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার হয়ে ছিল তার মৃত্যুর পর। এই বিচার প্রিভি কাউন্সিল পর্যন্ত গড়িয়েছিল এবং তার ফাঁসি হয়েছিল। কবর থেকে তার হাড়গোর তুলে ফাসি কাষ্ঠে ঝুলানো হয়েছিল। এটাই হল আইনের শাসন।
‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট শেখ হত্যার প্রতিবাদে যুদ্ধ করে দেশের যে ক্ষতি করেছি, সেই অপরাধে আমার ফাঁসি চাই।
স্বাধীনতার ঘোষক মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যার ষড়যন্ত্রের কথা জেনেও তা প্রকাশ না করার এবং হত্যাকারীদের সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে আমার ফাঁসি চাই।
‘৮৩-এর মধ্য ফেব্রুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জয়নাল ও জাফর এবং ‘৮৪-এর ফেব্রুয়ারী সেলিম ও দেলোয়ার হত্যায় শেখ হাসিনার পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়ে যে অপরাধ করেছি তার জন্য আমার ফাঁসি চাই।
‘৯২ ডিসেম্বরে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন পন্ড করার জন্য শেখ হাসিনার পরিকল্পনা ও নির্দেশে হিন্দু-মুসলমান রায়ট লাগিয়ে যে অপরাধ করেছি তার জন্য আমার ফাঁসি চাই।
১৯৯২ সালের পর থেকে ১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত আন্দোলনের নামে ঢাকা শহরে শেখ হাসিনার নীল নক্সা ও নির্দেশে যে ১০৩ (এক শত তিন জন) জন লোক নিহত হয়, এই অজ্ঞাতনামা ১০৩ জন মানুষ হত্যার দায়ে আমার ফাঁসি চাই।
আমার ফাঁসি চাইঃ তবে তার আগে
তবে তার আগে
১। সম্পূর্ণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সঠিক সময়ে শেখ মুজিবর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা না করায়, আমাদের স্বাধীনতার জন্য নিহত (শহীদ) হতে হয় এবং দুই লক্ষ মা, বোনকে ধর্ষিত হতে হয়। এই ত্রিশ লক্ষ মানুষ হত্যাএবং দুই লক্ষ নারী ধর্ষিত হওয়ার জন্য দায়ী শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর ফাঁসি চাই।
২। মুক্তি যুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার অভিযোগে শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর বিচার চাই, শাস্তি চাই।
৩। যে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে এবং দেশ স্বাধীন করে শেখ মুজিবর রহমানকে স্বাধীন দেশে ফিরিয়ে এনেছে, স্বাধীনতার পর ভারত থেকে সেই প্রকৃতমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা না এনে, রাজকার আলবদরসহ ভূয়া ব্যক্তিদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ (সার্টিফিকেট) দেওয়ার অভিযোগে শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর বিচার চাই, শাস্তি চাই।
৪। ক্ষমা না চাইতেই স্বাধীনতা বিরোধি রাজাকার আল বদরদের ঢালাও ভাবে ক্ষমা ঘোষণা করার অপরাধে শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর শাস্তি চাই।
৫। মহান বিপ্লবী নেতা কমরেড সিরাজ সিকদারকে বন্দি অবস্থায় বিনা বিচারে গুলি করে হত্যা করার অপরাধে শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর ফাঁসি চাই।
৬। সিরাজ শিকদারকে খুন করে পবিত্র পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে আজ কোথায় সিরাজ সিকদার বলে দম্ভোক্তি করে পবিত্র পার্লামেন্টকে অপবিত্র করার অপরাধে শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর ফাঁসি চাই।
৭। জনগনের ভোট দেয়ার অধিকার, মিছিল করার অধিকার, দল করার অধিকার এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণসহ সংবিধানের মৌলিক অধিকার হরণ করে জাতির উপর একদলীয় (বাকশাল) শাষণ শোষণ চাপিয়ে দেয়ার অপরাধে শেখ মুজিবর রহমানের মরনোত্তর বিচার চাই, শাস্তি চাই।
ক। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শেখ মুজিবর রহমান নিহত হওয়ার পর অনেক চেষ্ট এবং কষ্টের পর শিক্ষিত ছাত্র যুবকদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনার ধারার সূচনা হয়েছিল। ছাত্র যুবকরা ভাবতে শুরু করেছিল “রাজনীতি হচ্ছে মানুষকে দেওয়ার জন্য, পাওয়ার জন্য নয়।”
কিন্তু শেখ হাসিনা দেশে এসে সন্ত্রাসী, চোরাকারবারী, কালোবাজারী, ঘুষখোরদের রাজনীতিতে টেনে এনে কালোটাকাকেই রাজনীতির চালিকা শক্তিতে পরিনত করেছে এবং রাজনীতি থেকে সকল প্রকার নীতি আদর্শ ঝেটিয়ে বিদায় করে প্রতিষ্ঠিত করেছে নীতিহীন এক রাজনীতি। এই অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার চাই, শাস্তি চাই।
খ। ভারতে বসে স্বাধীনতার ঘোষক মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করে এবং ১৯৮১ সালের ৩০শে মে তা বাস্তবায়িত করার অপরাধে শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই।
গ। ১৯৮২ সালে, জনগন কর্তৃক নির্বাচিত বিএনপি সরকার উৎখাত করে সামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার চাই, শাস্তি চাই।
ঘ। সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল এরশাদকে হাতের মুঠোয় রাখার জন্য ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করে , ছাত্র আন্দোলনের নামে, ‘৮৩-র মধ্যে ফেব্রুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাফর ও জয়নাল এবং ‘৮৪-র ফেব্রুয়ারীতে সেলিম ও দেলোয়ার হত্যার অপরাধে শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই।
ঙ। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন পন্ড করার জন্য হিন্দু-মুসলমান রায়ট লাগিয়ে দেওয়ার অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার চাই, শাস্তি চাই।
চ। ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত, আন্দোলনের ইস্যু তৈরী করার জন্য ঢাকা শহরে ১০৩ জন নিরীহ অজ্ঞাতনামা সাধারণ মানুষকে খুন করার অপরাধে শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই।
আমার ফাঁসি চাইঃ উপসংহার
উপসংহারঃ
সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোহাম্মাদ এরশাদের মত ক্ষমতাসীন থাকাকালে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে, শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাবেন। এবং পালিয়ে যাবার আগে শেখ হাসিনা কাশ্মিরের হিন্দু রাজার মতো ভারতীয় সেনাবাহিনী ডেকে দেশটাকে ভারতের দখলে দিয়ে যাবেন।
“সমগ্র জাতি বিশেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং মুক্তিযোদ্ধারা হুশিয়ার।”
Post a Comment